দিপক রায়, নিজস্ব প্রতিবেদক :
বর্তমানে রংপুরের তারাগঞ্জে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলার খবর।
ঘটনাটি কোথাও আলোচনা আবার কোথাও ঝড় তুলেছে সমালোচনার। আসলেই কি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, নাকি একজন চেয়ারম্যানের জনপ্রিয়তা রুখতে ধর্ষণের মামলার নাটক সাজানো হয়েছে? এমন প্রশ্ন এখন পুরো উপজেলার সাধারণ মানুষের মুখে মুখে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ ও তারাগঞ্জ থানায় নথিভুক্ত মামলার সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের ১ তারিখ সয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলট সয়ার পোদ্দারপাড়া গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েকে তারাগঞ্জের কুর্শা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে অবস্থিত নিজের বাসায় ডেকে এনে একদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেন।
পরের দিন ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজনদের হাতে মেয়েকে তুলে দেন।
বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনদের সহায়তায় তারাগঞ্জ থানায় উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে মধ্য রাতেই মামলাটি নথিভুক্ত করেন তারাগঞ্জ থানা পুলিশ।
অভিযোগে চেয়ারম্যানের সাথে দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করলেও ভুক্তভোগীর সাথে সাক্ষাতে কথা বললে তিনি বলেন, প্রায় ৩ বছর ধরে চেয়ারম্যানের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক চলমান। প্রেমের সম্পর্কের জেরে চেয়ারম্যানের ডাকে সাড়া দিয়ে ৩ বছর ধরে চেয়ারম্যানের নিজ বাসাসহ বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন স্থানে তারা শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হয়েছেন বলেও জানান অভিযোগকারী। ঘটনার দিন রবিবারেও (১ সেপ্টেম্বর) দীর্ঘদিনের প্রেমের টানে প্রেমিকের ডাকে সাড়া দিয়ে চেয়ারম্যান প্রেমিকের বাসায় রাত্রিযাপন করেন বলে ভিডিও সাক্ষাৎকারে জানান তিনি। এরপর পরিবারের লোকজনের মাঝে বিষয়টি জানাজানি হলে পারিবারিক চাপে তিনি থানায় মামলা করেছেন বলে কথিত ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকারে বিষয়টি উঠে আসে।
বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণের দুইদিন পর আপনি থানায় অভিযোগ করলেন, এই দুই দিনে আপনি ব্যবস্থা না নিয়ে এতো দেরীতে থানায় অভিযোগ করলেন কেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ভুক্তভোগী কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।
একদিন আটকে রেখে ধর্ষণের পর পরেরদিন যখন আপনাকে লোকজনের সম্মুখে আপনার অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তখন কেন আপনি ধর্ষণের ঘটনাটি প্রকাশ করেননি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অভিযোগকারী বলেন, আমি ভয়ে ছিলাম তাই তখন কিছু বলিনি। বাড়িতে এসে যখন সবাই আমাকে বিভিন্নভাবে চাপ দেওয়া শুরু করে তখন সবাইকে বলেছি। এরপর পরিবারের লোকজনের চাপে থানায় যেয়ে মামলা করেছি।
এদিকে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানের সহধর্মিণী বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েদের তারাগঞ্জের এই বাসা থেকে স্কুলে যাওয়া আসা সুবিধা হয়। তাই আমরা পরিবারের সবাই এই বাসাতেই থাকি। ঘটনার দিনেও আমি সন্তানদের নিয়ে এই বাসাতেই ছিলাম। এখানে কোন মেয়েও আসেনি আর ধর্ষণের কোন ঘটনাও ঘটেনি।
আমার স্বামী জনপ্রিয়তা পেয়ে সাধারণ মানুষের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার জনপ্রিয়তা নষ্ট করতেই ওই মেয়ে কোন পক্ষের প্ররোচনায় এই ধর্ষণের নাটক সাজিয়েছে।
ওই মেয়ে বলছে যে আমি ঘটনার দিন সৈয়দপুরের বাসায় ছিলাম। তাই বাসা ফাঁকা থাকার সুযোগে চেয়ারম্যান তাকে বাসায় এনেছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সৈয়দপুরে আমাদের কোন বাসাবাড়িই নেই।